রাজস্ব আয়ের লক্ষ মাত্রা অর্জনে ব্যর্থ কাস্টমস, লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি আয়ের রেকর্ড মোংলা বন্দরের
মোঃনূর আলম(বাচ্চু),মোংলা প্রতিনিধি :
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) তেমন কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরে। করোনা পরিস্থিতি শুর“ হওয়ার পর থেকে নানামুখী পদক্ষেপের কারণে বন্দরের সব কার্যক্রম সচল রয়েছে। ফলে সদ্য শেষ হওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯১ কোটি ৯৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা মুনাফার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১১৫ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে লক্ষমাত্রা অর্জনে ব্যার্থ হয়েছে মোংলা কাস্টমস হাইজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন,কাস্টমস কতৃপক্ষের ভোগান্তীর কারনে তাদের লক্ষ মাত্রা অর্জিত হয়নি।
মোংলা ও বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯০৩টি বাণিজ্যিক জাহাজ বন্দরে ভেড়ে এবং ১ কোটি ১০ লাখ টন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়। একই সঙ্গে ৫৯ হাজার ৪৭৬টি ইউজ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়। এ অর্থবছরে আমদানি-রফতানি খাতের পণ্য হ্যান্ডলিং করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে ৩২০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এর মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি, সংস্কার ও উন্নয়নকাজে ২০৫ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার পরও ১১৫ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুনাফা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯১২টি দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে আসে। হ্যান্ডলিং হয় ১ কোটি ১৩ লাখ টন বাল্ক কার্গো এবং ৫৭ হাজার ৭৩২টি ইউজ কনটেইনার। এতে এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ ১৩৩ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান জানান,বন্দর কতৃপক্ষ,আমদানী-রপ্তানীর সাথে জড়িত সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মোংলা বন্দর রাজস্ব আয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে।
অন্যদিকে মোংলা কাস্টম হাউজের গেল অর্থবছরের লক্ষ্য মাত্রা ৪ হাজার ৭শ কোটি ৮২ লাখ টাকা । অর্জিত হয়েছে ২হাজার ৮শ ৮৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা । লক্ষ মাত্রা থেকে পিছিয়ে ১ হাজার ৮শ ১৯ কোটি টাকা ।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল জানান,বন্দর সৃষ্টির ৬৮ বছর পর গত বছর খুলনা থেকে মোংলায় স্থানান্তর করা হয় কাস্টমস এর কার্যক্রম। তবে সংস্থাটির শুল্ক গোয়েন্দা শাখার কার্যক্রম এখনো খুলনা থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে আমদারী-রপ্তানী পন্য ছাড় করাতে বাড়তী সময় ব্যয় ও ফাইল নিয়ে খুলনা মোংলা গুরে তাদের ভোগান্তীতে পড়তে হয়। বিশেষ করে শুল্ক গোয়েন্দা কতৃক লগ দেয়া পন্য দিনে দিনে পরীক্ষন শেষে কোন আইনি প্রক্রিয়া থাকলে তা নিষ্পতি করে পন্য খালাসের বিষয়টি নিশ্চিত না করায় তাদের ভোগান্তী বাড়ছে।
ব্যাসায়িদের যদি ফাইল নিয়ে মোংলা খুলনা করতে হয় তা হলে করোনা কালিন সময়ে তারা বড় ধরনের ব্যাবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে ব্যবসায়ী ভোগান্তীর কারনে কাসস্টমস কতৃপক্ষের রাজস্ব আয় কমেছে বলে মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী নেতা,কাস্টমস ও বন্দরের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা শাখার কার্যক্রম মোংলায় স্থানান্তর করতে হবে। তানা হলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তী রয়ে যাবে।
এ বিষয়ে কাস্টমস”র শুল্ক গোয়েন্দা শাখার সহকারী কমিশনার সোনিয়া আক্তার ব্যবসায়ীদের ভোগান্তীর কথা স্বীকার করে জানান, মোংলায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দপ্তর না থানায় বাদ্য হয়ে তারা খুলনায় বসে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একই সাথে তিনি জানান, দির্ঘ দিনেও সংস্থাটির শুল্ক বিভাগকে মোংলায় স্থানান্তরের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
কোন মন্তব্য নেই