শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজারে একমাস ধরে পানি বন্দি তিনশত পরিবার
মোঃ লালচান মাহমুদ শরণখোলা থেকেঃ
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজারের তিনশত পরিবার প্রায় একমাস ধরে পানি বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপণ করছে। পরিবারগুলোতে রান্না-বান্না বন্ধ থাকায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। ঘর থেকে পানি-কাঁদা পেরিয়ে বের হচ্ছেন। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত চরম হবার কারনে দুর্বিসহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মানাধীন ভেড়িবাঁধের কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করেছেন।
সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাই স্কুলের পিছন থেকে সরকারী খাদ্যগুদাম পর্যন্ত প্রায় তিনশত পরিবার পানি বন্ধী অবস্থায় আছেন। পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যরা গৃহবন্ধী হয়ে আছে। পায়খানা ডুবে যাওয়ার সর্বত্র ময়লা পনিতে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। জীবিকার তাগিদে ময়লা পানি পেড়িয়ে বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা রায়েন্দা সরকারী হাইস্কুলের শিক্ষক ওমর ফারুক, কাঠ ব্যবসায়ী খলিল খাঁন, শহিদুল খাঁন, ফারুক খাঁন, রহিমন বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের আগে থেকেই বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে এছাড়া গত এক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিতে পানি বেড়ে ঘর-বাড়ি, রান্নাঘর, টয়লেটগুলো তলিয়ে গেছে। রান্না-বান্না, গোসল করতে পারছি না। ঘর থেকে বের হলেই ময়লা পানি। জীবিকার তাগিদে কাঁদা ও ময়লা পানি পেরিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে। পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যরা সারাদিন বাইরে থাকলেও নারী ও শিশুরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। পায়খানাগুলো পানিতে ডুবে যাবার কারনে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ময়লা পানি শরীরে লেগে অনেকের শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। রায়েন্দা খালের পাশ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মানাধীন ভেড়িবাঁধের কারনে পানি নিষ্কাশনের পথগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ জটিলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে পানি নিষ্কাশনের দাবী জানান।
ইউপি সদস্য জালাল আহম্মেদ রুমি জানান,
ভেড়িবাঁধের কাজের কারনে পাঁচ ছয়টি ড্রেনের মূখ বন্ধ হবার কারনে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দ্রুত ড্রেন নির্মান না করলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, রোববার একটি পয়েন্ট থেকে পাইপ দিয়ে পানি নামানো ব্যবস্থা করা হয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। আটকে থাকা পানি বের করার জন্য আরো বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূলত ভেড়িবাঁধের সাথে ১০টি ড্রেন ধরা রয়েছে কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা এখনো নির্মান করছে না। এগুলো নির্মান হয়ে গেলে আর এ সমস্যা থাকবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, পানিবন্ধী এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভেড়িবাঁধ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
এব্যাপারে ভেড়িবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, সি.এইচ.ডাব্লিউ নামের চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্ষা মৌসুমে কাজ করে না। তাই অধিকাংশ কর্মী ছুটিতে নিজ দেশে চলে গেছেন। আরা যারা আছেন তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে বের হচ্ছেন না। তারপরেও তাদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই