পুনরায় মোংলা বন্দরকে অস্থিতিশীল করতে চায় কতিপয় শ্রমিক নামধারি নেতারা
মোঃনূর আলম(বাচ্চু)মোংলা প্রতিনিধিঃ
শ্রমিক নামধারী কতিপয় ব্যক্তি আবারো মোংলা বন্দরকে অস্থিতিশীলের ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত ১/১১ এর সময়ে বিলুপ্ত হওয়া মোংলা বন্দদর শ্রমিক সংঘের তৎকালীন নেতারা ওই সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে শ্রমিক ও বন্দর নিয়ে নানা ধরণের অপ্রপচার ও বন্দর অচলের নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও বর্তমানে মোংলা বন্দরে শ্রমিকদের সুবিধার্থে মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ নামের একটি বৈধ সংগঠন রয়েছে। সেই সংগঠনই শ্রমিক- কর্মচারীদের ন্যার্য্য দাবীর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠাতায় কাজ করছেন। কিন্তু বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারক তৎকালীন শ্রমিক সংগঠনটি বিলুপ্ত ঘোষণা করার পরও বিলুপ্ত সংগঠনের নেতা একেএম শাহাবুদ্দিন, মাহাবুবুর রহমান মানিক ও ফরিদুল আলম মজুমদারসহ আরো কয়েকজন তথাকথিত শ্রমিক/কর্মচারী মোংলা বন্দর ও শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ভূয়া কাগজপত্র প্রেরণ করে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিরি সৃষ্টি করে চলেছেন। এ চক্রটি বন্দরের বৈধ শ্রমিক সংগঠনের নেতা না হলেও তারা নিজেদের নেতা দাবী করে বিলুপ্ত ভূয়া সংগঠনের পরিচয়বহনের পাশাপাশি সিল ও প্যাড ব্যবহার করে ফায়দা লুটছেন। যা মুলত ফৌজদারী অপরাধের সামিল। এ চক্রটিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা সকলেই বিএনপির পদধারী নেতা-কমর্ী। এরাই বিগত বিএনপি সরকারের আমলে শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে অহেতুক আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এসকল নেতাদের মোংলা শহর ও শহরতলীতে একাধিক বাড়ী ঘর রয়েছে। রয়েছে নানা ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। এ চক্রের ষড়যন্ত্রেও কারণে বিএনপির আমলে এ বন্দরটি মৃত বন্দরে পরিণত হয়। বন্দরের শ্রমিকদের উস্কানী দিয়ে হরতালসহ নানা ধরণের কর্মসূচী দিয়ে বন্দরকে অস্থিতিশীল করে তোলে তারা। ফলে তৎকালীল বিএনপি সরকারও এ বন্দর থেকে তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন।
মৃত প্রায় সেই মোংলা বন্দরকে পুনরায় সচল করেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি এবং স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক, স্থানীয় সাংসদ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের প্রচেষ্টায় এ বন্দর লোকসান কাটিয়ে এখন লাভবান ও কর্মব্যস্ত বন্দরে রুপ নিয়েছে। সেই সাথে সহযোগীতা করেছেন আমদানী-রপ্তানীকারকেরাও। চট্টগ্রামমুখী ব্যবসায়ীদের এ বন্দরমুখী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ নেন।
বন্দরটি যখন লাভের পথ ধরে ধীরে ধীরে আধুনিক ও অধিকতর কর্মব্যস্ত হয়ে উঠছে ঠিক তখনই ১/১১এর সেই মাফিয়া চক্রের দোষরোর কথিত শ্রমিক পরিচয়ে বন্দরকে অচলসহ শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারায় চালাচ্ছেন।
কতিপয় এ দুষ্ট চক্রের হাত থেকে বন্দরকে এবং বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীদের রক্ষায় বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে বন্দরের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। অভিযোগ দেয়ার পর অনেক দিন পেরিয়ে গেল সে সকল চিহ্নিত মাফিয়া চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যার ফলে তারা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। যার ফলে অপরাধ অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে যা আর আলোরমুখ দেখছেনা।
১/১১ এর মাফিয়া চক্রের তালিকায় থাকা কতিপয় বন্দর ব্যবহারকারী এ চক্রটিকে উন্ধন দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিলুপ্ত মোংলা বন্দর শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক একেএম শাহাবুদ্দিন বলেন, তারা যেটি করছেন সেটি আইন সিদ্ধ। এ বিষয়ে দুই একদিন পরে রিপোর্ট করেন সকল কাগজপত্র দিবো।
এদিকে বন্দরের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খুলনা বিগাভিয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো: মিজানুর রহমানও মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ নামের রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত নতুন ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া অন্যান্য কোনটি কার্যকর নয় বলেও অভিহিত করেছেন। এর আগে মোংলা বন্দর শ্রমিক সংঘ নামে যেটি ছিল সেটি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে সেটির কোন কার্যক্রম গ্রহণ যোগ্য নয়। কেউ সেটির পরিচয় বহন করলে তা হবে বেআইনি।
এ বিষয়ে খুলনা বিভাগিয় শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো: মিজানুর রহমান বলেন, বিলুপ্ত সংগঠনের নামে ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন দপ্তরে যে চিঠি দিচ্ছেন এবং পরিচয়বহন করছেন এটি সম্পূর্ণ বেআইনি এবং ফৌজদারি অপরাধও। তাদের বিষয়ে বন্দরের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মুলত ব্যবস্থা নিবেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি আরো বলেন, তাদের এ অবেআইন কার্যক্রম সম্পর্কে খুলনা বিভাগিয় কমিশনার, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে অবহিত করার পাশাপাশি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, শ্রম অধিদপ্তর আমাদেরকে জানিয়েছে দিয়েছে মোংলা বন্দর শ্রমিক সংঘ নামের সংগঠনটি অবৈধ আর মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ নামক সংগঠনটি বৈধ। সুতরাং যেটি অবৈধ আমরা তো সেটিকে আমলে নেই না। তাদেরকে কোন চিঠিও দিই না। অবৈধটা তো অবৈধই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তো কিছু নেই।
কোন মন্তব্য নেই