মোংলায় পর্যটন শিল্পের ধস,মোটা অংকের ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা
মোঃনূর আলম(বাচ্চু),মোংলা(বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
করোনার প্রভাবে টানা বন্ধের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে মোংলা সুন্দরবন এরিয়া পর্যটনশিল্প। লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার পর্যটনখাত। এ ক্ষতি পুষিয়ে আগামী দিনে নতুনভাবে এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা।জানা যায়, মোংলা সুন্দরবন এরিয়ায় ১৫ থেকে ২০ টি হোটেল-মোটেল রয়েছে আর পর্যটকবাহী ট্রলার যান রয়েছে প্রায় ৮০০শতাদিক আর এই পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ১০০০ হাজার মানুষ। করোনা শুরুর দিকে মোংলা সুন্দরবন এরিয়ার সব পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় মোংলা উপজেলা প্রশাসন। আর এই লকডাউনের কারণে পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল-মোটেল আর পর্যটকবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ বন্ধের কারণে পর্যটন শিল্প নিয়ে যাদের রোজগার ছিলো তাদের সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব-অনটন।
পর্যটকবাহী ট্রলার চালক মোঃ ইলিয়াস হাওলাদার সিআইএনটিভি২৪কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা ট্রলার চালাতে পারছি না। তাই আমাদের আয় নেই। আমরা অনেক কষ্টে দিনযাপন করে যাচ্ছি। করোনার কারনে আমাদের মাত্র এক বার ১০ কেজি চাউল ত্রাণ দিয়েছে এছাড়া আর কোন কিছু দেয়া হয়নি।
সুন্দরবনের পর্যটকবাহী আর এক ট্রলার চালক করিম বলেন, সুন্দরবন একটি পর্যটন এলাকা আমরা পর্যটকদের নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করি। পর্যটক আসলে আমরা তাদের ট্রলার করে বিভিন্ন স্পটে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সময় ব্যয় করি। ওই আয় দিয়ে আমরা জীবনযাপন করি। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে করোনার কারণে আমাদের আয় নেই আমরা অসহায় হয়ে জীবনযাপন করছি।
আর এক ফল বিক্রেতা রাজু সিআইএনটিভি২৪কে জানান।আমাদের মত ছোট ব্যবসায়িরা যারা ফলের দোকান, চায়ের দোকান বিভিন্ন ব্যবসা করি পর্যটক এলাকায়, করোনায় আমাদের প্রায় ২০০ ছোট বড় দোকান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এই পেশার সঙ্গে জড়িতদের পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই করোনা সংকটে কিছু সংগঠন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য পরিমাণ ত্রাণ পেয়েছি যা দিয়ে এই দু:সময়ে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
এদিকে লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। এক জন হোটের ব্যবসায়ি সিআইএনটিভি২৪ বলেন, করোনায় আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিমাসে আমাদের হোটেল ব্যয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। কিন্তু লকডাউনের কারণে পর্যটক না আসায় আমরা এই ক্ষতি কিভাবে মেটাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ কামরুল ইসলাম মোটো ফোনে সিআইএনটিভি২৪কে জানান।এ এলাকার অনেক মানুষ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু সব বন্ধ থাকায় সবাই বেকার। আয় রোজগার বন্ধ থাকায় তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তাদের কেউ কেউ আবার ব্যাংক ও সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ট্রলার,ছোট লঞ্চ নির্মাণ করেছে। এমন স্থবির পরিস্থিতির কারণে অনেকের এখন লোকসান গুনছে। তাই সরকারিভাবে মোংলা সুন্দরবন এরিয়ার পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের জরুরিভাবে প্রণোদনা দিলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা এগিয়ে যেতে পারবে বলে আমি মনে করি।
কোন মন্তব্য নেই